ধ্বংসের পাহাড় ঠেলে বেঁচে ওঠার লড়াই

কুমিল্লার মুরাদনগরে ছিল বাড়ি। ঘরে ছিল অভাবের হানা। জীবন বাঁচানো দায়। আট বছরের ছেলে আর স্বামীকে নিয়ে ফরিদা বেগম ঘরের মায়া ছাড়লেন। শিকড় গাড়লেন রাঙামাটির বেতবুনিয়ার এই দক্ষিণপাড়া গ্রামে। সেটাই হলো তাঁর নতুন ঠিকানা। তারপর একে একে কেটে গেল ৪৫ বছর। সেই ফরিদার বয়স এখন ৬৭ বছর।ফরিদা আসার আগে এ গ্রামে থিতু হয়েছিলেন তাঁর বড় ভাই আসকর আলী। তাঁর কাছেই খবর পেয়েছিলেন, এ তল্লাটে অনেক ফাঁকা জমি, গাছগাছালি আর বাঁশ অফুরন্ত। এখানে এলে অভাব হবে না। সেই সুদিনের আশাতেই এখানে আসা। ভাইয়ের হাতছানিতে চলে এলেন ফরিদাও। তারপর কেটে গেছে অনেক দিন। স্বামীর চিকিৎসার জন্য মুরাদনগরের একখণ্ড জমি বিক্রি করে দিয়েছিলেন। এখানে বন বিভাগের স্থানীয় কর্মকর্তাকে কিছু অর্থ দিয়ে পেয়েছিলেন জায়গাটুকু। স্বামী মারা গেছেন। এক ছেলে আর দুই মেয়ে নিয়ে একটু একটু করে রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার এ গ্রামে গড়ে তুলেছিলেন সংসার। শণের ঘর থেকে বাঁশের ঘর, এরপর মাটিরটা হলো। ছেলে মোহাম্মদ হানিফ বড় হয়ে রোজগেরে হলেন। কখনো দিনমজুরি, কখনোবা ছোট ব্যবসা করেন। মা-ছেলে মিলে কাজ করে সেমিপাকা বাড়িটি গড়েছিলেন। নিজেদের জমানো সবটা অর্থে কুলায়নি, বেসরকারি সংস্থা থেকে ঋণ নিতে হয়েছে। বাড়িটি গড়েছিলেন বলতে হচ্ছে। কারণ, এখন যেটুকু আছে, তা আর বাসের উপযোগী নয়। তিনটি ঘর ছিল, এখন একটির অর্ধেক কাঠামো আছে। গত ১৩ জুনের পাহাড়ধস দরিদ্র এই পরিবারের সাধের বাড়িটি দুমড়ে-মুচড়ে দিয়েছে।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ঢাকায় লংকান প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা

UAE denies hacking Qatar news agency

Three Israelis stabbed to death in West Bank attack